পর্নোগ্রাফি সম্পর্কে এই মুহূর্তে আমরা সকলেই অবগত। জেন এক্স বা ওয়াই সকলেই স্কুল বা কলেজ জীবনেই এর সঙ্গে পরিচিত হয়েছে। ভারত বা ভারতীয় উপমহাদেশে পর্নোগ্রাফি অন্য একটা নামে পরিচিত, তা হলো ব্লু ফিল্ম। এহেন নামের পিছনেও রয়েছে কারণ।
পর্নোগ্রাফির ব্লু ফিল্ম বা বিএফ হিসেবে প্রসিদ্ধ হওয়ার পিছনে রয়েছে একাধিক কারণ।
প্রথমদিকে বি-গ্রেড ছবি বা পর্নোগ্রাফি স্থানীয় থিয়েটার বা প্রেক্ষাগৃহতে দেখানো হতো। সে সময় এই ছবিগুলির প্রচারের জন্য ব্যবহৃত পোস্টারগুলিও ছিল অন্যদের থেকে আলাদা। এই পর্ন সিনেমার পোস্টার অন্যদের থেকে আলাদা করতে নীল এবং সাদা রং ব্যবহার করা হতো।
সেই থেকেই পর্ন ছবি নীল রংয়ের সঙ্গে মিলিত হয়।
এ ছাড়াও অন্য গল্পও প্রচলিত আছে নীল ছবিকে ঘিরে। ছবির খরচ কমাতে নির্মাতারা পুরনো সাদা-কালো বা ব্যবহৃত ছবির রিল ব্যবহার করতো। সেগুলির বিশেষত্ব বোঝাতে নীল রং দিয়ে চিহ্ন দেওয়া থাকতো।
মূলত নিম্নমানের রিল বোঝাতেই এই চিহ্ন ব্যবহার করা হতো। নীল ছবি নামের পিছনে এটিও একটি বড় কারণ। তা ছাড়া ক্যাসেটের দোকানে পর্নোগ্রাফির ক্যাসেট পৃথক করে রাখতে তা নীল প্যাকেটে রাখা হতো। সেই থেকেও পর্নোগ্রাফি নীল ছবির তকমা পেয়েছে বলে দাবি করেন অনেকে।
নীল ছবি। ব্লু ফিল্ম। পর্ন সিনেমাকে সাধারণ মানুষ এভাবেই ডাকে। কিন্তু কেন?পর্ন সিনেমার সঙ্গে নীল রঙের কী যোগ?নীল কী রগরগে যৌনতার রঙ! না, নীল তো ভালবাসার রঙ,আবেগের রঙ। বরং যৌনতার সঙ্গে যদি কোনও রঙ যায়, তাহলে হয়তো লাল বা গোলাপি এ জাতীয় রঙকেই বলা যায়। তাহলে?
নীল ছবি। ব্লু ফিল্ম। পর্ন সিনেমাকে সাধারণ মানুষ এভাবেই ডাকে। কিন্তু কেন?পর্ন সিনেমার সঙ্গে নীল রঙের কী যোগ?নীল কী রগরগে যৌনতার রঙ! না, নীল তো ভালবাসার রঙ,আবেগের রঙ। বরং যৌনতার সঙ্গে যদি কোনও রঙ যায়, তাহলে হয়তো লাল বা গোলাপি এ জাতীয় রঙকেই বলা যায়। তাহলে?
আসলে নীল ছবি বা ব্লু ফিল্ম কথাটা এসেছে ”ব্লু ল’ থেকে। ‘ব্লু ল’ হল যা মোরাল কোড বা নীতির বাইরে তৈরি হওয়া জিনিস তাদের জন্য তৈরি হওয়া নিয়ম। ব্লু ল অনুযায়ী নীতি বিরুদ্ধ কোনও কাজকে স্বীকৃত দেওয়ার একটা চেষ্টার আইন। আগে ইউরোপে পর্ন সিনেমাকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু বেশ কিছু জায়গায় দেখা যায় এই জাতীয় সিনেমা নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
প্রথমে পর্নের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করা হত। কিন্তু পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হত। এভাবে ধরা, ছাড়ার খেলায় পুলিস বিরক্ত হয়ে গেল। তখন ‘ব্লু ল’ অনুযায়ী জেল নয় তাদের জরিমানা করা শুরু হল। তারপর থেকেই পর্ন সিনেমাকে বলা হল ব্লু ফিল্ম, বা নীতি বিরোধী সিনেমা।
দুনিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্ন ওয়েবসাইটে ‘পর্ন হাব’-এ নিয়ে বলা হয়েছে, The term “blue film” or “blue movie” refers to a cinematic production that is contrary to the standard moral code.
অনেকে আবার বলেন, অষ্টাদশ শতকের শেষে রেভ স্যামুয়েল পিটার একটা কথা আ্নেন সেটা হল ‘ব্লু নসেস’ “bluenoses”। এটা হল নীল পাতায়, নীল কভার দেওয়া এক বই যা তত্কালীন ধর্মবিরোধী বিভিন্ন কাজকে নানা যুক্তি দিয়ে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়। এই বইতে বলা হয় পর্ন সিনেমা হল মানুষের জন্য দারুণ একটা জিনিস, যা মানুষের চাহিদা পূরণ করে। অনেকে বলেন, সেই ব্লু বুক থেকেই নাকি ব্লু ফিল্ম নাম হয়।
আবার অনেকে বলেন, আগে পর্ন বা ওই জাতীয় সিনেমা কিছু প্রেক্ষাগৃহে ব্লু প্রোজেক্টরের মাধ্যমে দেখানো হত, তাই নাকি ব্লু ফিল্ম বলা হয়।
কারও কারও আবার যুক্তি, ইংরেজিতে একটা কথা আছে ‘ওয়ান্স ইন এ ব্লু মুন’। মানে মাঝে খুব কম যেটা হয়। যেহেতু সেকালে খুব কমই পর্ন রিলিজ করত, তাই ওকে ‘ব্লু মুন’ থেকে ‘ব্লু ফিল্ম’ ডাকা হয়।