দেহ ব্যবসা থেকে বলিউড ব্লকবাস্টার নায়িকা, এক রাতের জন্য নিতেন ৩০০০ টাকা

 

আসলে এই ছবিগুলির সবথেকে বড় বিশেষত্ব হল, এই ছবির লেখনী। বলে রাখা ভাল যে, এই ফিল্মগুলি লিখেছেন প্রতিভাময়ী শগুফতা রফিক।



বলিউডে ‘ও লমহে’, ‘আওয়ারাপন’, ‘ধোখা’, ‘রাজ’, ‘মার্ডার ২’ এবং ‘জন্নত ২’-এর মতো ছবি এসেছে। আসলে এই সমস্ত ছবির মূল উপজীব্য হল দুর্দান্ত গল্প এবং চিত্রনাট্য। এই ছবির তারকা, পরিচালক এবং সঙ্গীতশিল্পীদের কথা হয়তো সকলেই জানেন। কিন্তু এই সমস্ত ছবির পিছনে থাকা আসল মুখ কিন্তু অন্য একজন। আসলে এই ছবিগুলির সবথেকে বড় বিশেষত্ব হল, এই ছবির লেখনী। বলে রাখা ভাল যে, এই ফিল্ম গুলি লিখেছেন প্রতিভাময়ী শগুফতা রফিক। একের পর এক চিত্রনাট্য লিখেছেন তিনি। আর পাশাপাশি সংলাপ লেখা থেকে শুরু করে পরিচালনা সব কিছুই সামলেছেন।


কিন্তু শগুফতা রফিকের নিজের গল্পটাই আবেগপ্রবণ করে তুলবে। এতটাই লড়াই করতে হয়েছে তাঁকে, যা কেউ কল্পনাও করতে পারবেন না। 



আর শগুফতা রফিককে বলিউডে এনেছিলেন মহেশ ভাট। আসলে শগুফতার ভিতরে থাকা প্রতিভার কথা বুঝেছিলেন তিনি। তাই সুযোগ করে দিয়েছিলেন। ২০০৬ সালে প্রথমবারের জন্য ‘ও লমহে’ লিখেছিলেন শগুফতা।


এরপর একাধিক ব্লকবাস্টার ছবি বেরিয়ে এসেছে তাঁর ক্ষুরধার লেখনী থেকে। যদিও ব্যক্তিগত জীবনে প্রচুর ভুগতে হয়েছে শগুফতাকে। তাঁর জীবনের সবথেকে যন্ত্রণাদায়ক অধ্যায় হল, তিনি এখনও জানেন না, তাঁর জন্মদাত্রী মায়ের পরিচয়।



অভিনেত্রী আনোয়ারি বেগমের কাছেই লালিত হয়েছেন তিনি। কেউ কেউ বলেন, শগুফতা আসলে আনোয়ারির নাতনি। আবার কেউ বা বলেন, অভিনেত্রী শগুফতাকে রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছিলেন। ফলে আজও কেউই জানেন না শগুফতার আসল মা-বাবার পরিচয়। দারিদ্র্যের কারণে একটা সময় শগুফতাকে দেহ ব্যবসায় পর্যন্ত নামতে হয়েছিল। প্রাইভেট পার্টিতে নাচ করতে যেতেন তিনি।


ফিল্মফেয়ারের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় তিনি বলেছিলেন যে, ওই প্রাইভেট পার্টিগুলির পরিবেশ একেবারে যৌনপল্লির মতোই ছিল। এমনকী, অন্য মহিলাদের নিয়ে রীতিমতো ফূর্তি করতে আসতেন ভদ্র পরিবারের পুরুষরাও।


শগুফতা যখন মাত্র ১৭ বছরের কিশোরী, তখনই তাঁকে এই নরকযন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। দেহ ব্যবসার পাশাপাশি দুবাইয়ে বার নর্তকীর কাজও করতে হয়েছিল তাঁকে। ফিল্মফেয়ারের এক সাক্ষাৎকারে ওই লেখিকা জানিয়েছিলেন যে, সেই কাজে এক রাতের জন্য ৩০০০ টাকা করে পেতেন তিনি। এরপর কারও পরামর্শে দুবাই পৌঁছে সেখানে বার নর্তকী হিসেবে কাজ শুরু করেন। আর দুবাইয়ে কাজের সূত্রেই প্রথম বার প্রেমে পড়েছিলেন শগুফতা।


পানশালায় পুরুষদের মনোরঞ্জনের জন্য নাচ-গান করতেন তিনি। সেখানেই একবার এক ৪৫ বছরের পুরুষ শুগুফতার নাচ দেখে দেখে তাঁর উপর টাকার বর্ষণ করেছিলেন। এরপরেই দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে তা বিয়ের পিঁড়ি অবধি আর পৌঁছয়নি। এরপর ২০০২ সাল নাগাদ মহেশ ভাটের সঙ্গে আলাপ হয় শগুফতার। তখনই তাঁকে লেখার সুযোগ দেন স্বনামধন্য ওই পরিচালক। ২০০৬ সালে মোহিত সুরির ‘কলিযুগ’ ছবির কয়েকটা দৃশ্য লিখেছিলেন শগুফতা। পরে ‘উয়ো লমহে’ লেখেন। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ‘মার্ডার ২’ থেকে শুরু করে ‘আশিকি ২’ ছবি তিনি উপহার দিয়েছেন দর্শকদের।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন